ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় দুই ধরনের কর্মের কথা বলেছেন। একটি সকাম কর্ম অন্যটি হচ্ছে নিষ্কাম কর্ম। আজ এই ব্লগে আমি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে নিষ্কাম কর্মের কথা বলেছেন তার বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করছি ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ও আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে লিখবেন।
ফলের আশা আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে যে কর্ম করা হয় তাকে নিষ্কাম কর্ম বলা হয়। অন্যদিকে ফলে আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে সকল কর্ম করা হয় তাকে স্বকাম কর্ম বলা হয়। গীতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বারবার এই নিষ্কাম কর্ম করার কথা বলেছেন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন নিষ্কাম কর্ম হচ্ছে সত্য উপলব্ধি করার আদর্শ পথ। ফলের আকাঙ্ক্ষাহীন কর্ম সব সময় কর্মীকে শুদ্ধ ও পবিত্র হতে সাহায্য করে। তাই আমাদের সব সময় ফলের আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্ত হয়ে নিষ্কাম কর্ম করা উচিত। কেননা শুধু কর্মেই আমাদের অধিকার আছে কর্মের ফলে নয়।
গীতায় বর্ণিত 'নিষ্কাম কর্ম' তত্ত্বটি ব্যাখ্যা ও বিচার
কৃষ্ণ গীতায় নিষ্কাম কর্ম কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। গীতায় বলা হয়েছে আমরা এক মুহূর্তের জন্য কর্ম না করে বাঁচতে পারব। নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য সব সময় কর্ম করতেই হয়। কর্ম না করে কোন জীবেরই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। গীতায় কর্ম করার কথা বলা হয়েছে।
কর্ম করার পরে কর্মের ফলের উপর আকাঙ্ক্ষা ও কর্মের উপর আসক্তিকে গীতায় নিষেধ করা হয়েছে। ফলের প্রতি আকাঙ্ক্ষা ও কর্মের প্রতি আসক্তির জীবের বন্ধন ঘটায়। আর এই সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি পেতে নিষ্কাম কর্মের বিকল্প নেই।
পবিত্র গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উপদেশ দিয়েছেন— ‘মা কর্মফল হেতুর্ভূ’, অর্থাৎ কর্মের ফলের প্রত্যাশা কর না। কর্মফলের বাসনায় যুক্ত থেকো না, কারণ ‘ফলেসক্তো নিবধ্যতে’ অর্থাৎ ফলের আসক্তির ফলে বন্ধন ঘটে ।
তাই গীতায় ফলের ইচ্ছা ত্যাগ করে কর্ম করার উপদেশ দেওয়া। পবিত্র গীতায় বলেছে, যে ব্যক্তি কর্মফলের ইচ্ছা রাখে, তাঁরা দয়ার পাত্র হয় ।
‘ শুধুমাত্র কর্ম করাই তোমার অধিকার, কর্মের ফলাফলে তোমার অধিকার নাই , তাই তুমি কর্মফলের উপর কোন উপকার বাসনা রেখো না এবং কর্ম ত্যাগ করার বিচার কর না।’ (২/৪৭)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন