হিন্দু ধর্মে একাদশী একটি গুরুত্বপূর্ণ উপবাসের দিন। এই দিনে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা হয়, যা ধর্মীয় এবং স্বাস্থ্যগত উভয় দিক থেকেই উপকারী। একাদশীর উপবাস পালনের সময় অনেকেই জানেন না, এই দিনে মিষ্টি খাওয়া যায় কি না বা কোন ধরনের মিষ্টি খাওয়া উচিত। এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে একাদশীর উপবাসের মূল উদ্দেশ্য এবং খাদ্যতালিকার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি।

মিষ্টি

একাদশীর উপবাস এবং খাদ্যতালিকার নিয়ম

একাদশীর উপবাস পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো শারীরিক ও মানসিক শুদ্ধি। উপবাসে সাধারণত শস্যজাতীয় খাদ্য বর্জন করা হয়। যেমন চাল, গম বা ডাল জাতীয় খাবার এদিন এড়িয়ে চলা হয়। পাশাপাশি মসলা, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি থেকেও বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

তবে, ফল, দুধ, দই, মাখন, গুড়, মধু এবং শুকনো ফল একাদশীর উপবাসে খাওয়া যেতে পারে। মিষ্টিজাতীয় খাবারের মধ্যে এমন কিছু বেছে নিতে হয় যা শস্য বা দানা জাতীয় উপাদান ছাড়াই তৈরি।

একাদশীতে কি মিষ্টি খাওয়া যায়?

একাদশীতে মিষ্টি খাওয়া যায়, তবে তা নির্ভর করে সেই মিষ্টি তৈরির উপাদানের ওপর। শস্যজাতীয় কোনো উপাদান ব্যবহার না করে তৈরি মিষ্টি একাদশীতে খাওয়া সম্পূর্ণ বৈধ। নিচে কিছু মিষ্টিজাতীয় খাবারের উদাহরণ দেওয়া হলো যেগুলো একাদশীতে খাওয়া যেতে পারে:

ছানার সন্দেশ: দুধ থেকে তৈরি ছানার সন্দেশ একাদশীতে খাওয়া যেতে পারে। তবে নিশ্চিত হতে হবে যে এতে কোনো শস্যজাতীয় উপাদান যোগ করা হয়নি।

নারিকেলের লাড্ডু: নারিকেল, চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি লাড্ডু একাদশীর জন্য আদর্শ। এতে কোনো ধরনের শস্যজাতীয় উপাদান থাকে না।

মাখন মিষ্টি: গৃহে তৈরি মাখন এবং চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে। এটি সহজে হজম হয় এবং উপবাসের সময় শক্তি প্রদান করে।

শুকনো ফলের মিষ্টি: কাজু, কিশমিশ, বাদাম ইত্যাদি শুকনো ফল দিয়ে তৈরি মিষ্টি একাদশীতে উপযুক্ত। এতে প্রাকৃতিক মিষ্টত্ব থাকে এবং এটি স্বাস্থ্যকরও।

একাদশীতে মিষ্টি খাওয়ার কিছু সতর্কতা

  • মিষ্টি খাওয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে তা শস্য বা দানা জাতীয় উপাদান ছাড়া তৈরি।
  • অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি উপবাসের উদ্দেশ্য ব্যাহত করতে পারে।
  • বাজার থেকে কেনা মিষ্টির ক্ষেত্রে উপাদান তালিকা ভালোভাবে দেখে নিন।

উপসংহার

একাদশীতে মিষ্টি খাওয়া যায়, তবে তা নির্ভর করে মিষ্টির উপাদানের ওপর। ঘরে তৈরি বা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী তৈরি মিষ্টি একাদশীর উপবাসের সময় খাওয়া উপযোগী। এই দিনে ধর্মীয় বিধান মেনে চলার পাশাপাশি নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক মিষ্টি বেছে নিয়ে একাদশী পালন করুন আনন্দের সঙ্গে।

আরও পড়ুন : একাদশীর আগের দিন কি নিরামিষ খেতে হয়? জানুন সঠিক বিধি-বিধান

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন