মহাভারতের মহাকাব্যিক কাহিনি আজও মানুষকে মুগ্ধ করে। কৌরব ও পাণ্ডবদের মধ্যে হওয়া কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুধু একটি ধর্মযুদ্ধ ছিল না, এটি ছিল ন্যায় ও অধর্মের চূড়ান্ত লড়াই। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে—পাণ্ডবদের বর্তমান বংশধর কি আজও বেঁচে আছেন? তারা কোথায় এবং কিভাবে রয়েছেন?
পাণ্ডবদের বংশধর কীভাবে টিকে থাকল?
মহাভারতের শেষে, যুদ্ধে কৌরবদের সম্পূর্ণ বিনাশ ঘটে। কিন্তু পাণ্ডবদের কেউ কি তাদের বংশ টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন? মহাভারত অনুসারে, পাণ্ডবরা যখন স্বর্গযাত্রার জন্য হিমালয়ের দিকে যাত্রা করেন, তখন তাদের একমাত্র জীবিত উত্তরসূরি ছিলেন পরিক্ষিত, যিনি অর্জুনের পুত্র অভিমন্যুর সন্তান।
যুদ্ধের পর, রাজা যুধিষ্ঠির হস্তিনাপুরের রাজত্ব পরিক্ষিতের হাতে তুলে দেন। এই পরিক্ষিতের থেকেই কুরু বংশের নতুন ধারা শুরু হয়, যা পরবর্তী সময়ে পাণ্ডব বংশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
বর্তমানে পাণ্ডবদের বংশধর কোথায়?
বর্তমান ভারতে বহু রাজপরিবার রয়েছে যারা নিজেদের কুরুক্ষেত্রের কুরু বংশের উত্তরসূরি বলে দাবি করেন। বিশেষ করে, ভারতের উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং নেপালের কিছু রাজপরিবার নিজেদেরকে পাণ্ডবদের উত্তরসূরি বলে মনে করেন।
- উত্তরাখণ্ডের রাজবংশ: অনেক গবেষকের মতে, উত্তরাখণ্ডের কিছু ক্ষত্রিয় রাজবংশ পাণ্ডবদের বংশধর বলে বিশ্বাস করেন।
- নেপালের মল্ল রাজবংশ: নেপালের কিছু প্রাচীন রাজবংশ নিজেদেরকে অভিমন্যুর উত্তরসূরি বলে দাবি করেন।
- রাজস্থানের কিছু রাজপরিবার: মেবার ও জোধপুরের কিছু রাজপরিবার কুরু বংশের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কিত বলে দাবি করে।
প্রামাণ্য সূত্র কী বলে?
পাণ্ডবদের বর্তমান বংশধর সংক্রান্ত তথ্যের বেশিরভাগই লোককাহিনি ও ঐতিহাসিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আধুনিক জিনগত গবেষণায় এখনো এর সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ভারতের প্রাচীন রাজবংশগুলোর মধ্যে অনেকেই এই ঐতিহ্যের দাবি করেন।
উপসংহার
পাণ্ডবদের বর্তমান বংশধর আজও ইতিহাসের এক রহস্য। যদিও বিভিন্ন রাজপরিবার নিজেদের পাণ্ডব বংশধর বলে দাবি করে, তবে এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। মহাভারতের এই কিংবদন্তি কেবল ধর্মীয় বা ঐতিহাসিক নয়, এটি আজও বহু মানুষের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে।
আপনি যদি এই বিষয়ে আরও গভীরে জানতে চান, তাহলে ভারতের প্রাচীন রাজপরিবার ও ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র খতিয়ে দেখতে পারেন। মহাভারতের গল্প যেমন চিরকালীন, তেমনি এর বংশধরদের রহস্যও চির অমিমাংসিত।
আরও পড়ুন : কৌরবদের 100 ভাইয়ের নাম: মহাভারতের বিস্ময়কর তথ্য
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন