মিষ্টি কুমড়া বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। এর পুষ্টিগুণ ও স্বাদ মানুষের কাছে বেশ প্রিয়। বর্তমানে কৃষকদের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল কুমড়ার জাতের চাহিদা বাড়ছে, যার মধ্যে ‘সুইটি’ অন্যতম। এটি একটি উন্নত জাত, যা স্বল্প সময়ে বেশি ফলন দেয় এবং বাজারদরও ভালো।
সুইটি জাতের বৈশিষ্ট্য
- উচ্চ ফলনশীল: অন্যান্য কুমড়ার তুলনায় এই জাতটি বেশি ফলন দেয়।
- স্বল্প সময়ে পরিপক্ব: মাত্র ৮৫-৯০ দিনের মধ্যেই ফসল সংগ্রহ করা যায়।
- আকৃতিতে বড় ও আকর্ষণীয়: ফল গড়ে ২-৪ কেজি ওজনের হয় এবং রঙ উজ্জ্বল হলুদ-কমলা।
- মিষ্টি ও সুস্বাদু: এই জাতের কুমড়ার স্বাদ তুলনামূলক বেশি মিষ্টি ও নরম হয়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: পাতার দাগ, পাউডারি মিলডিউ ও ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধী।
চাষের পদ্ধতি
১. জমি প্রস্তুতি:
- দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি সুইটি জাতের জন্য উপযুক্ত।
- জমি চাষ করে মাটির ঝুরঝুরে অবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
২. বীজ বপন:
- বীজ বপনের জন্য মার্চ-এপ্রিল এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাস সর্বোত্তম সময়।
- সারি থেকে সারির দূরত্ব ২.৫-৩ মিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১.৫-২ মিটার রাখা ভালো।
৩. সার ব্যবস্থাপনা:
- প্রতি গাছের জন্য ১০-১৫ কেজি গোবর, ১০০-১৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ৮০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োজন।
৪. সেচ ও আগাছা দমন:
- চারা গজানোর পর নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
- আগাছা নিয়ন্ত্রণ করতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- ফুল ফোটার ৪০-৫০ দিন পর ফল সংগ্রহ করা যায়।
- ফল সংগ্রহের পর ৭-১০ দিন ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে সংরক্ষণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
অর্থনৈতিক লাভজনকতা
- সুইটি জাতের কুমড়া চাষে প্রতি বিঘায় গড়ে ৩০০-৪০০টি ফল উৎপাদন সম্ভব।
- কৃষকদের জন্য এটি লাভজনক ফসল, কারণ বাজারে এই জাতের চাহিদা বেশি।
উপসংহার
উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি কুমড়ার জাত ‘সুইটি’ কৃষকদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। স্বল্প সময়ে অধিক ফলন, সুস্বাদু স্বাদ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে এটি কৃষকদের ভালো মুনাফা নিশ্চিত করতে পারে।
আরও পড়ুন : উন্নত হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি: জাত, সার প্রয়োগ ও সময়কাল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন