বাংলাদেশের পাবলিক সার্ভিস কমিশন (BPSC) কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (BCS) পরীক্ষা হলো দেশের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, যা প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন সরকারি ক্যাডারে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য নেওয়া হয়। বিসিএস পরীক্ষার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। এর আগে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য পৃথক পৃথক পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো।
বিসিএস পরীক্ষা সর্বপ্রথম কত সালে শুরু হয়েছিল? বিসিএস পরীক্ষার সূচনা
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকারি প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্বাধীনতার পর প্রথমদিকে ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তান আমলের কাঠামো অনুসরণ করে সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তবে, একটি একক ও মানসম্মত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় ১৯৮১ সালে সরকারি প্রশাসন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কেন বিসিএস পরীক্ষা চালু করা হয়?
১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সরকার "বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস রুলস" প্রণয়ন করে এবং একই বছরে বিসিএস পরীক্ষা প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—
- যোগ্য ও মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিত করা
- একটি অভিন্ন ও স্বচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করা
- প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি করা
- নিয়োগ প্রক্রিয়াকে দুর্নীতি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক করা
বিসিএস পরীক্ষার পূর্ববর্তী ব্যবস্থা
১৯৮৩ সালের আগে সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে নিয়োগ দিত। পাকিস্তান আমলে এটি সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস (CSS) নামে পরিচিত ছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (BPSC) গঠিত হলেও একটি সমন্বিত পরীক্ষার ব্যবস্থা তখনো চালু হয়নি।
বিসিএস পরীক্ষার কাঠামো
বিসিএস পরীক্ষা মূলত তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়:
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (MCQ টাইপ)
- লিখিত পরীক্ষা
- ভাইভা (মৌখিক) পরীক্ষা
প্রথম বিসিএস পরীক্ষার সময় এর কাঠামো কিছুটা ভিন্ন ছিল, তবে বর্তমানে এটি একটি পরিপূর্ণ ও কঠোর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিসিএস পরীক্ষার গুরুত্ব
বিসিএস পরীক্ষা দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। এখানে সফল হলে একজন ব্যক্তি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক পদে যোগ দিতে পারেন। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্যারিয়ার পরীক্ষা।
উপসংহার
১৯৮৩ সালে বিসিএস পরীক্ষার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়, যা দেশের সর্বোচ্চ সরকারি চাকরির জন্য মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করে। এটির প্রবর্তনের ফলে প্রশাসনে দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির পথ সুগম হয়েছে। আজকের দিনে এটি তরুণদের জন্য সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার অপশনগুলোর একটি।
আরও পড়ুনঃ ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসের মূলভাব বিষয়বস্তু ও চরিত্র সমূহ বিশ্লেষণ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন